সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
রূপালী স্বাস্থ্য।।
নিউমোনিয়া রোগের আক্রমণ হঠাৎই শুরু হয়। শিশু এবং বয়স্করা শীতকালে এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। জীবাণুর সংক্রমণের কারণে ফুসফুসের প্রদাহকে নিউমোনিয়া বলে। এই প্রদাহ ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাসের কারণে হতে পারে।
নিউমোনিয়ার কারন ও কিভাবে হয়-
যেসব কারণে নিউমোনিয়ার জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে তা হলো- অপুষ্টি, অতিরিক্ত ধূমপান, বহুমূত্র রোগ, পুরনো কাশি, কিছু ওষুধের ব্যবহারের ফলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
নিউমোনিয়া জীবাণু নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং কোনো একটি অংশে স্থানীয়ভাবে প্রদাহের সৃষ্টি করে সেই স্থানে বিভিন্ন রক্তের সাদা কণিকার সমাবেশ ঘটে। ফলে বায়ুপূর্ণ বায়ুথলি ক্রমে রক্তকণিকা, জীবাণুর ধ্বংসাবশেষ এবং অন্যান্য পদার্থে ভরাট হয়ে কঠিন হয়ে যায়। একে বলা হয় কনসোলিডেশন। রোগী যখন ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠে, ফুসফুসে জমে থাকা পদার্থগুলো কাশির সঙ্গে ফুসফুসের বাইরে চলে আসে এবং ফুসফুস আবার স্বাভাবিক বায়ুভর্তি অবস্থায় ফিরে আসে।
লক্ষণ: নিউমোনিয়ার প্রধান লক্ষণ জ্বর। ১০৪ বা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০-৪১ ডিগ্রি সে.) পর্যন্ত শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তাপমাত্রা বাড়লে শিশুদের খিঁচুনি হতে পারে। বুকে ব্যথা, কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট, কাশির সাথে ছিটেফোঁটা রক্ত এবং গুরুতর জীবাণুর সংক্রমণের ফলে রোগী অজ্ঞান এবং বিকারগ্রস্ত হতে পারে।
রোগের প্রথম দিকে মাথাব্যথা, অরুচি দেখা দেয়। নাড়ির গতি এবং নিঃশ্বাসের গতি দ্রুত হয়। জিভ, ঠোঁট, নখ এবং আঙ্গুলের ডগা নীলচে হতে পারে। মুখে জ্বরঠোসা নিউমোনিয়ার আরেক লক্ষণ।
চিকিৎসা: এই রোগের চিকিৎসা হলো সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। শ্বাসকষ্টের জন্য রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে। শ্বাসনালির অভ্যন্তর পরিস্কার রাখতে হবে। কফে যে জীবাণু পাওয়া যাবে সেই জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকরী জীবাণুনাশক নির্ধারণ করে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করা হয়।
সাধারণভাবে অ্যামোক্সিসিলিন, এরিথ্রোমাইসিন, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন, সেফট্রিয়াক্সোন ইনজেকশন জাতীয় ওষুধ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গের ওষুধ দিতে হবে। ফুসফুসকে কর্মক্ষম করার জন্য উপযুক্ত ব্যায়ামও করতে হবে। শীতে নিউমোনিয়ার প্রকোপ ব্যাপকভাবে বাড়ে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করা একান্ত জরুরি।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।